আমি বরাবরের মত এবারও লিখছি, তবে এবারের লেখায় কিছুটা ভিন্নতা প্রকাশ পাবে। কারণ, এটা সিক্রেট ফ্যামিলি লাইফ স্টোরি। এর পূর্বে কখনো আমি এই ধরনের লেখা কখনো লেখিনি। যদিও এবারের স্টোরিতে ব্যক্তিগত অনেক আনুষঙ্গিক কথা তুলে ধরব। এই কথাগুলি শুনে কেউ লজ্জায় মাথা হেট করতে পারেন আবার কেউ কেউ আমাকে অসংখ্য গালমন্দ করতে পারেন! আমার মত লোকে এই ধরনের লেখা লেখি কেন? এই ধরনের লেখা আমি নাও তো লিখতে পারতাম, ইত্যাদি ইত্যাদি বিষয় প্রকাশ করবে অনেকেই। তবে যারা এই ধরনের মন্তব্য করবেন, তারা অবশ্যই প্রথমেই আমার সম্পূর্ণ লেখা পড়ে, জেনে-বুঝে তারপর মন্তব্য করবেন আশা করছি।
খোলাখুলি ভাবে যৌন বিষয়ে কিছু কথা বললে, এটা হয়তো সমাজের নাক-কান কাটা যেতে পারে! তবে ব্যক্তি জীবনে তার সুফল বয়ে আনবে। সমাজ টা আসলে এমনই! কেউ একবেলা না খেয়ে থাকলে, খবর নেবে না! কিন্তু কেউ যদি তার পছন্দের কাপড় পড়ে রাস্তায় বের হয়, তাহলে তার সমালোচনার শেষ হয় না। কোন মহিলা, মাসিক কিস্তির টাকা দিতে হিমশিমকাচ্ছে, এনজিও সংস্থার ম্যানেজার বাসায় এসে গালমন্দ সহ অনেক শাসিয়েছে। এই সময় সমাজ কিংবা সামাজিক লোকজন এসে তার এই করুণ অবস্থা থেকে উদ্ধার করবে না। তবে এই মহিলা এনজিওর ঋণ পরিশোধ করতে, গার্মেন্টসে চাকরি করে মধ্যরাতে বাড়ি ফিরলে, সমাজ তাকে পতিতা বলে আখ্যা দিবে। তার সম্মানহানি করবে।
যাই হোক, যে, বিষয়ে বলতে চেয়েছিলাম। যেহেতু, রাজনীতির খাতায় নাম লিখেছি, সে ক্ষেত্রে সমাজের উন্নয়ন ও মানব কল্যাণের কার্য বিশদ বিশেষভাবে পালন করতে হয়। আমি আমার মত করেই মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। আর মানুষের সেবা করতে গিয়ে দিন-রাত সবাই আমার কাছে সমান। দিন-রাত আমার কাছে সমান হলেও অর্থনৈতিক উন্নয়নে সবাই কিন্তু সমান না। যে জন্যে আমাদের দেশের গরিব মানুষের ঘর-সংসার, বিভিন্ন কারণে অহরহর ভেঙ্গে যাচ্ছে।
এই সমস্ত লেখা, যার জন্য লিখলাম। তার নাম লাবনী আক্তার (ছদ্মনাম)। লাবনী রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা। আমার ছাত্র রাজনীতি থেকে তাদের সাথে পরিচয়। যদিও তারা আমার রক্তের কেউ না। রাজনৈতিক পরিচয়ে তাদের সাথে পরিচয়। সেই ছোটবেলা তাহাকে দেখেছিলাম। বড় হওয়ার পর আর তাকে কখনো দেখিনি। শুনেছি লাবণীর বিয়ে হয়েছে সবেমাত্র পাঁচ বছর হলো। এখন মাঝেমধ্যেই আমাকে ফোন করে লাভনী। তার সংসারের কষ্টের কথাগুলো শুধুমাত্র বলে, অর্থাৎ এক প্রকার বিচার দেয়। সমাজকে সুশৃংখল করতে যদিও মাঝেমধ্যে বিভিন্ন বিচার আচার করতে হয় আমার। আমি কখনোই সরজমিনে এই বিষয়টা যাচাই-বাছাই করিনি। সে আমার কাছে তার দুঃখ কষ্টের কথা বললে, আমি তাকে সান্তনা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনা। কিন্তু কিছুদিন ধরে তাকে আর সান্ত্বনা দিয়েও পারছি না। সে আমার কোন কথাই শুনছে না। শুধু বলছে, আমি আমার হাজব্যান্ড কে ডিভোর্স দিবো।
এই ধরণের কথা এর আগেও অনেকবার বলেছিলো লাভনী। তবে তাহাকে সংসার করার জন্য অনেক বুঝিয়ে। লাবনী এখন দুই বাচ্চার মা। তার একটি বাচ্চা মারা গেছে আর অন্য একটি বাচ্চা বেঁচে আছে। লাবনীর অভিযোগ ছিলো, তার স্বামী কোন কাজকর্ম করে না এবং কাজ করতে বললে সে তার বাচ্চা সামনেই ধুমধাম মারপিট ও শারীরিক নির্যাতন করে। লাভনীর মুখে এই ধরনের কথা শুনে, আমার অনেক খারাপ লেগেছিল। তবুও আমি তার স্বামীকে নিয়ে ঘর সংসার করার পরামর্শ দিয়েছিলাম। এখন আর সে আমার কোন কথায় শুনছে না। তার একটাই কথা, স্বামীকে ডিভোর্স দিবেই, দিবে। দেখুন কত বড় যন্ত্রণায় আমি পড়েছি!
লাবণী স্বামীকে কাজকর্ম না করার জন্যই কি ডিভোর্স দিচ্ছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলল: না, আমি আর পারছি না। কেন পারতেছ না, কি সমস্যা? সে তার স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে পারতেছে না। আজব! কি এমন নির্যাতন করে সে? তার স্বামী দিন-রাত ও সবসময় তার সাথে মেলামেশা করে এবং করতে চায়। অতিরিক্ত যৌনসঙ্গম সে সহ্য করতে পারেনা। তাই তার স্বামীকে সে ডিভোর্স দিবে।
আমি তার কথাই কিছুটা অবাক হলাম। এই প্রজন্মের মেয়েরা স্বামীর যৌন অক্ষমতার কারণে স্বামীকে ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু লাবনীর ক্ষেত্রে ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেল। আমরা জানি স্বামী-স্ত্রী উভয়ের সম্মতিতে যৌন মিলন করা ভালো। লাভনী আমাকে বলল: আমি জানি, তবে আমার শরীর যদি সহ্য করতে না পারে, তাহলে কি করে আমি তার সাথে যৌন সঙ্গম করব? এমন প্রশ্নে তার কাছ থেকে চঞ্চল্যকর তথ্য শুনে পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। লাবনী কথা হলো: আমার স্বামী আমার সাথে যৌন মিলন করে না বরং মাদকদ্রব্য আমার সাথে যৌনসঙ্গম করে। আমি তাকে বললাম এটা কেমন কথা? সে বলল: জ্বি ভাই। আমার স্বামী নেশা করে আমার শরীরের উপর এমন ভাবে ঝাপিয়ে পড়ে যে, ক্ষুধার্ত হিংস্র জানোয়ারও এর চেয়ে ভালো।
তার অত্যাচারে আমি মৃত্যু শয্যায়। আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাকে অনেক আকুতি, মিনতি করি কিন্তু কে শুনে কার কথা। তাই আমি বেঁচে থাকার জন্য আমার মাদকাসক্ত স্বামীকে ডিভোর্স দিব।
লাবনীর ফুটফুটে বাচ্চা ও তার সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি এবং নিখাদ ভাবে সঠিক পরামর্শ দিয়েছি। লাবনীও আমার কথা মত অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু লাবনীর স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় ও তাহাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায়, সে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বাধ্য হলো। এখন ডিভোর্স হওয়ার পর সমাজের অনেকেই হয়তো বলবে, মেয়েটা ভালো না। তাই তার স্বামীর সংসার করতে পারেনি। কোন মেয়েই, কখনো চায় না, তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে, কিন্তু পরিবেশ ও পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে লাবনীর মত মেয়েরা সোনার সংসার ত্যাগ করে স্বামীকে ডিভোর্স দেয়।