কুড়িগ্রাম কারাগারে হাজতির মৃত্যু, পুলিশী নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের  

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


আবু সুফিয়ান পারভেজ, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম)॥ কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে ভূরুঙ্গামারীর এক হাজতির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গুরুতর অসুস্থ্য অবস্থায় ওই হাজতিকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরিবারের অভিযোগ নির্যাতনের কারনেই তার মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১ জুন) মাদক পরিবহনের সন্দেহে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ তাকে আটক করে। এ সময় তার কাছে মাদক না থাকায় পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ করে। পরিবারের দাবি, খারাপ আচরণ করায় তাকে থানায় নির্যাতন করে পুলিশ। এতে অসুস্থ হলে ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসক শেষে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রসহ আদালতে পাঠানো হয়। পরে তাকে জেল হাজতে পাঠায় আদালত।

নিহত হাজতির নাম একরামুল হোসেন এরশাদ (২৪)। তিনি ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কামাত নলেয়া গ্রামের শওকত আলীর ছেলে। এলাকায় তিনি চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। তার নামে একা‌ধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ওইদিন আটকের পর পুলিশ এরশাদের কাছে কিছু পায়নি। পুলিশ তাকে ‘শারীরিক নির্যাতন’ করেছে। এ কারণে কারাগারে থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

নিহতের স্ত্রী আদুরী ও বড় বোন শিউলি বেগম জানান, গত বুধবার (৩১মে) বাড়ির পাশ থেকে এরশাদকে আটক করে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ। এরপর তাকে ‘প্রচন্ড মারপিট’ করে । এতে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরের দিন অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।

এরশাদের বড় বোন শিউলি বলেন, ‘পুলিশ এসে তাকে ধরে পেটাতে পেটাতে নিয়ে গেছে। আমার ভাইয়ের কাছে কোনও মাদক পায় নাই। থানায় নিয়ে গিয়ে আবার পিটিয়েছে। আমার ভাই তর্ক করেছে বলে তার জীবন নষ্ট করে দিতে চেয়েছে। আমার ভাইকে টর্চার করার কারণে সে মারা গেছে। আমরা এর বিচার চাই।’

এরশাদের স্ত্রী আদুরি বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর সাথে অন্যায় হইছে। আমি এর বিচার চাই।’

ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এরশাদকে আটকের সময় সে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি করে। পড়ে গিয়ে আঘাত পায়। এজন্য তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ১৫১ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

কুড়িগ্রাম কারাগারের দায়িত্বরত জেলার আবু ছায়েম বলেন, ‘ওই আসামিকে হাসপাতালের কাগজসহ (চিকিৎসাপত্র) কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। কাগজে ফিজিক্যাল এ্যাসল্ট লেখা ছিল। আমরা তাকে কারা হাসপাতালে রেখেছিলাম। শনিবার দুপুরে সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।



Source link

IT Amadersomaj