নড়াইলে স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


মোঃ নূরুন্নবী সামদানী, নড়াইল॥ নড়াইল সদর উপজেলার মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তার অপকর্মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলে দাবি ভুক্তভোগিদের।

ভুক্তভোগিদের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মালিয়াট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক পদে যোগদান করেন রিংকু বিশ্বাস। তাকে ৬ মাসের মধ্যে এমপিওভুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক (বর্তমান সহকারী শিক্ষক) ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাস। টাকা নেয়ার ১২ বছর পার হলেও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি তিনি। আবার ক্ষিরোদ বিশ্বাসকে দেয়া টাকা চাইতে গেলে টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো অসৌজন্যমূলক আচারণ করেন। চাকুরি এমপিওভুক্ত হওয়ার আশায় সরল বিশ্বাসে শিক্ষক ক্ষিরোদ বিশ্বাসকে টাকা দিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে এখন দুকূল হারিয়ে দিশেহারা রিংকু বিশ্বাস। অন্যদিকে একই বিদ্যালয়ের এম.এল.এস.এস. পদে ২০১৪ সালে যোগদান করা বিশ্বজিৎ রায়ের কাছ থেকে পূর্ব নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্তি চাপ প্রয়োগ করে ৬০ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করেন তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষিরোদ বিশ্বাস। টাকা না দিলে বিশ্বজিৎ রায়ের চাকুরি হবেনা এবং নিয়োগের জন্য নেয়া পূর্বের টাকাও ফেরত দেবেনা বলে জানান শিক্ষক ক্ষিরোদ বিশ্বাস। ধূর্ত ক্ষিরোদের ফাঁদে পড়ে বাধ্য হয়ে ৬০ হাজার টাকা দেন এম.এল.এস.এস. পদে চাকুরি নেয়া বিশ্বজিৎ। পরে অতিরিক্ত ৬০ হাজার টাকা ফেরত চান বিশ্বজিৎ। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষিরোদ বিশ্বাসকে দেয়া টাকা ফেরত পেতে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন বিশ্বজিৎ ও রিংকু বিশ্বাস। কিন্তু কোনকিছুতেই কোন প্রতিকার পাননি তারা।

এদিকে বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের নিকট থেকে ৬০ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারি শিক্ষক (তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাস মুঠোফোনে কর্কশ কণ্ঠে বলেন, ৬০ লাখ তো আর নেয়নি। এবং রিংকু বিশ্বাসের নিকট হতে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ রিংকু বিশ্বাসের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নিছি এটা আপনি জানেন আর রিংকু বিশ্বাসের চাকুরি যে হয়ছে এইডে আপনি জানেন না?” তার চাকরি হয়ছে কি না সেটা বলেন? বেতন-ভাতার কথা বলে তো আর চাকরি দি নাই।” প্রতিবেদকের আর কোন প্রশ্ন ঠিকমতো না শুনেই রেগে গিয়ে শিক্ষক ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাস বারবার বলতে থাকেন যে, আমি কারো কাছ থেকেই কোন টাকা নেয়নি। কিছু সময় পর ওই শিক্ষক ফোন করে নানাভাবে প্রতিবেদককে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।

সহকারি শিক্ষক ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাসের অপকর্মের সুষ্টু বিচার চেয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মালতি পাঠক বলেন, ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাস সহকারি শিক্ষক কিন্তু তিনি প্রধান শিক্ষককেও মানেন না। তার আচার-আচারণ মোটেও শিক্ষকসুলভ নয়। তার সকল অপকর্মের ব্যাপারে ম্যানেজ কমিটিকে জানানো হয়েছে।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিমল বিশ্বাস বলেন, সহকারি শিক্ষক ক্ষিরোদ চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। খুব শীঘ্রই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ হায়দার আলী বলেন, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। এ ব্যাপারে অবগত ছিলেন না। অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

IT Amadersomaj