বিদায়ী আগস্ট মাসে ৪৪১ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৬, আহত ৭৯৩ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ৮ মাস আগে


স্টাফ রিপোর্টারঃ বিদায়ী আগস্ট মাসে ৪৪১ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৬ জন নিহত,৭৯৩ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৪৭ টি দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১৬ টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, আহত ১১ এবং ২১ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫০৪টি দুর্ঘটনায় ৪৯৪ জন নিহত এবং ৮২৮ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে ১৭১ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৮ জন নিহত, ১৪৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৭৭ শতাংশ, নিহতের ৩৯.৪৩ শতাংশ ও আহতের ১৮.৭৮ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১২৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত ও ১৫৪ জন আহত হয়েছে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে সিলেট বিভাগে ২২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ও ৬৯ জন আহত হয়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

 

আজ ০৬ (সেপ্টেম্বর) বুধবার সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরে সংগঠনটি। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ২২ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৬৩ জন চালক, ৭১ জন পথচারী, ১৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৫ জন শিক্ষার্থী, ০৮ জন শিক্ষক, ৫৭ জন নারী, ৩৪ জন শিশু, ০১ জন সাংবাদিক, ০৪ জন চিকিৎসক , ০১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এবং ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে- ০৭ পুলিশ সদস্য, ০১ ফার্য়ার র্সাভিস কর্মী, ০৩ জন চিকিৎসক , ০১ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ০১ জন সাংবাদিক, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৬২ জন পথচারী, ৩০ জন নারী, ২৭ জন শিশু, ২১ জন শিক্ষার্থী, ১৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ০৮জন শিক্ষক, ও ০২ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩৫ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮.৩৪ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.২০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৫.১১ শতাংশ বাস, ১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৫.৯৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৪.৫৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৭৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৬১.৪৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২১.৯৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২.৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২.৭২ শতাংশ বিবিধ কারনে, এবং ০.৯০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৫৪ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.০৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১.০৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭.২৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ : ১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক অবাধ চলাচল। ২. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি। ৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা । ৪. মহাসড়কের নির্মান ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন। ৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।৭. রেলক্রসিং-এ দায়িত্বরত ব্যাক্তির গাফেলতি। ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশসমূহ : ১. মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানী ও নিবন্ধন বন্ধ করা। ২. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান। ৩. ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা। ৪. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা সুনিশ্চিত করা। ৫. সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং অঙ্কন ও স্থাপন করা। ৬. সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে বাস্তবায়ন করা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করা। ৭. গণপরিবহন বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

IT Amadersomaj