মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন ঝিকরগাছার অক্সিজেন ফেরিওয়ালা শাহাবুদ্দীন

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১০ মাস আগে


শাহাবুদ্দিন মোড়ল, ঝিকরগাছা : “মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য” এই স্লোগানকে সামনে রেখে গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে অসুস্থ রোগীদের সাহায্য সহযোগিতা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ঝিকরগাছার অক্সিজেন ফেরিওয়ালা শাহাবুদ্দীন ওরফে সাহেব আলী। তিনি উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামের মৃত সৈয়দ আলী সরদার ও রহিমা বেগমের ছেলে ও বাঁকড়া বাজারের একজন তরুণ ব্যবসায়ী।

শাহাবুদ্দীন ওরফে সাহেব আলী করোনাকালীন সময়ে করোনা আক্রান্ত রোগীকে অক্সিজেনের ফেরিওয়ালা হিসাবে বিনামূল্যে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়েছেন। বাংলাদেশে যখন করোনার প্রকোপ বেড়ে গিয়েছিল, তখন তিনি তার নিজ এলাকায় করোনার রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে সেই সময় তার মধ্যে থাকা বিবেক জাগ্রত হয়ে গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে অসুস্থ রোগীদের সাহায্য সহযোগিতা করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অক্সিজেন ফেরিওয়ালা নামে পরিচিতি পায়। তারপর তরুণ এই ব্যবসায়ী মানবিক উপলব্ধি থেকে নিজ অর্থায়নে ৬০-৭০ টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ক্রয় করে মানুষের জীবন বাঁচাতে বিনামূল্যে এই সেবা প্রদান করা শুরু করে ও এলাকার গরীব, দঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘জরুরি একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার প্রয়োজন। কোনো সহৃদয় ব্যক্তির সহযোগিতা চাচ্ছি এমন কোনো শব্দ তার কানে পৌছালে হোক রাত ১টা বা ২টা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে অসুস্থ্য রোগীদের বাসায় পৌঁছে দেন তিনি। তার অক্সিজেন সাপোর্টে নিজ উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী শার্শা, মণিরামপুর ও কলারোয়া উপজেলার অনেক মানুষই সুস্থ্য হয়েছেন। সুস্থ্য মানুষগুলো যখন তার কাছে এসে কৃতজ্ঞতা জানান, তখন শাহাবুদ্দীন নিজেকে ধন্য মনে করেন অক্সিজেন ফেরিওয়ালা শাহাবুদ্দীন ওরফে সাহেব আলী।

অক্সিজেন ফেরিওয়ালা শাহাবুদ্দীন ওরফে সাহেব আলী বলেন, শুরুর দিকে আমার জন্য কাজটি সহজ ছিল না। আমি যখন শুরু করি তখনকার পরিস্থিতি বর্তমানের মতো ছিল না। মানুষের মাঝে বিরাজ করছিল করোনার মারাত্মক ভীতি। কোন বাড়িতে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে গেলে আশপাশের মানুষের হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো। এমনও হয়েছে অক্সিজেন নিয়ে গেলে ছেলে সামনে আসেনি। তার বাবাকে আমরাই অক্সিজেন সেট করে দিয়ে এসেছি। আক্রান্ত রোগী ও তার পরিবারের দোয়া ও ভালোবাসা আমাদের কাজ করতে অনুপ্রাণিত করছে। আসলে মানুষের জন্য কাজ করার সময় ও সুযোগ সবসময় আসে না। আমি যতদিন যতদিন পৃথিবীতে বাঁচবো ততদিন আমরা এই কার্যক্রম চালু রাখব। তিনি আরো বলেন, বাঁকড়া থেকে পার্শ্ববর্তী সকল উপজেলা শহর প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে সরকারী কোন হাসপাতাল নেই। ফলে এই জায়গার একজন অসুস্থ রোগী অক্সিজেন সাপোর্ট পাওয়ার আগেই মারা যায়। যার কারণে মানুষের জীবন বাঁচাতে অক্সিজেন দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমার ব্যবসার একটি অংশ অর্থ আমি করোনা রোগীদের সাহায্যে ব্যয় করি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন ঠিকমত গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থাকতে পারি।

IT Amadersomaj