ইউটিউব থেকে অনেকেই আয় করে। কিন্তু কিভাবে? ইউটিউব থেকে আয় করার উপায় কি? আজকে ইউটিউব থেকে আয় করার ৫টি উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। মিস না করতে চাইলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট হচ্ছে ইউটিউব। একটি চ্যানেল খুলে এই সাইটে ভিডিও শেয়ার করা যায়। যারা ভিডিও শেয়ার করে তাদের ইউটিউবার বলে। এ ওয়েবসাইটটি গুগলের মালিকানায় চলে। এখানে ভিডিওগুলো মন্তব্য করার ব্যবস্থাও রয়েছে।
কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা নিজের ভিডিও কন্টেন্ট শেয়ার করে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে আয় করতে পারে। ইউটিউব কপিরাইট আইনকে খুব ভালোভাবে মেনে চলে। তাই অন্যের কোনো কপিরাইট কন্টেন্ট শেয়ার করলে চ্যানেল বাতিল করে দেওয়া হয়।
অনলাইনে আয় করার সহজ একটি মাধ্যম ইউটিউব। আপনার মেধা থাকলে ইউটিউব থেকে সামান্য পরিশ্রম করেই হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারেন। কেউ কেউ লক্ষ লক্ষ টাকাও আয় করছে।
প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে তারা আয় করছে? তারা কয়েকটি উপায় অবলম্ব করে নিজের তৈরি ভিডিও ইউটিউবে শেয়ার করে আয় করছে। আস্তে আস্তে আমরা সেই উপায় ও নিয়মগুলো জানবো। ইউটিউব থেকে আয়ের জনপ্রিয় উপায়গুলো হলো।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইউটিবারদের আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে ইউটিউব এডসেন্স থেকে আয়। এডসেন্স হচ্ছে গুগলের বিজ্ঞাপন কোম্পানি।
নির্দিষ্ট কিছু চাহিদা পূরণ করতে পারলে একজন ইউটিউবার তার চ্যানেলের জন্য এডসেন্সের আবেদন করতে পারেন। ইউটিউবের সকল চাহিদা পূরণ হলে তারা চ্যানেলটির এডসেন্স এপ্রুভ করে।
চ্যানেলের ইউটিউব এডসেন্স এপ্রুভ হলে ঐ চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। আর সেই বিজ্ঞাপণের আয়ের কিছু অংশ গুগল রাখে আর বেশিরভাগ অংশ ইউটিউব চ্যানেলের মালিককে প্রদান করে।
এভাবেই ইউটিউব এডসেন্স থেকে একজন ইউটিউবার আয় করতে পারেন।
আপনার ভালো একটি ইউটিউব থাকলে ও আপনার কন্টেন্ট ভালো হলে ইউটিউব থেকে মাসে ১ লক্ষ টাকাও কামনো সম্ভব। তাই ইউটিবে আয় কেমন? কেউ এমন প্রশ্ন করলে আমার উত্ত্র হবে সেটা আপনার কাজের উপর নির্ভর করবে।
এমন প্রশ্ন অনেকেই করে থাকেন যে, ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে কত আয়? অথবা ইউটিউবে কত ভিউতে কত টাকা দেয়? আসলে ইউটিউব ভিউয়ের জন্য কোনো টাকা দেয়না। তারা বিজ্ঞাপনের উপর ভিত্তি করেই আপনাকে টাকা দিবে।
আপনার ভিডিওতে তারা কয়টি এড বা বিজ্ঞাপণ প্রচার করলো, সে বিজ্ঞাপনে এনগেজমেন্ট কেমন হলো বা ক্লিক কত পড়লো সে হিসেবেই তারা টাকা দেয়।
আবার বিজ্ঞাপণ ভিজিটরদের লোকেশনের উপর আপনার আয় নির্ভর করে। যেমনঃ বাংলাদেশ, ইন্ডিয়ার ভিউয়ার হলে আপনি কম টাকা পাবেন। কিন্তু আমেরিকা, ইউরোপের দর্শক হলে টাকা বেশি পাবেন। কারণ ঐসব দেশে বিজ্ঞাপণের
এক্ষেত্রে দেখা যায়, কেউ ১০০০ ভিউতে ১ ডলার পায় আবার কেউ ২-৫০ ডলারও পায়। সেটা বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য একটা বিশেষ লিংকের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়াই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। বিভিন্ন অনলাইন শপ ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান আছে। যেমনঃ অ্যামাজন, ডায়ানা হোস্ট, বাগডুম, বিডি শপ ইত্যাদি।
তাদের বিভিন্ন পণ্য বা সেবা আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক বা রেফারেল লিংকের মাধ্যমে সেল বা বিক্রি করে দিয়ে টাকা আয় করতে পারবেন।
এজন্য প্রত্যেক সেলে ২-১৫% পর্যন্তও কমিশন পাওয়া যায়। ১০% কমিশন হলে, ১০০০ টাকার ১০ টি পণ্য বিক্রি করে দিতে পারলে আপনি ১০০০ টাকা কমিশন পেয়ে যাবেন।
আপনার ভালো একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকলে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা অনায়াসে আয় করা সম্ভব। কেউ কেউ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে মাসে ১ লক্ষ টাকাও আয় করছেন।
আপনি ভিডিও সম্পর্কিত বিভিন্ন পণ্যের অ্যাফিয়েট লিংক আপনার ভিডিও ডিস্ক্রিপশনে দিয়ে দিবেন। ক্রেতারা উদ্ভুদ্ধ হলে সেই লিংকে ক্লিক করে পণ্য কিনবে। আর আপনি সেখান থেকে কমিশন পাবেন।
এক্ষেত্রে ক্রেতার বাড়তি কোনো খরচ হবেনা। অর্থাৎ সে পণ্যটি আসল মূল্যেই কিনবে। কিন্তু বিক্রেতা কোম্পানি আপনাকে কমিশন দিবে।
উল্লেখ্য, আমেরিকা,ইউরোপে গুগল এডসেন্সের চেয়েও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে বেশি আয় করা হয়। একই সাথে, তাদের প্রথম পছন্দ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
আপনার ভালো একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকলে খুব সহজেই বিভিন্ন কোম্পানি থেকে স্পন্সরশীপ পেতে পারেন। স্পন্সরশীপের মাধ্যমে মাসে প্রচুর টাকা আয় করা সম্ভব।
এই পদ্ধতিতে এডসেন্স থেকে কয়েকগুণ বেশি টাকা পাওয়া যায়। আপনি আপনার ভিডিওতে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার করবেন। বিনিময়ে ঐ কোম্পানি আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট করবে।
বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিভিউ করেও আপনি টাকা আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে দুইভাবে টাকা আয় করা যায়। ধরুন, সিম্পনি কোম্পানির নতুন একটি মোবাইল বাজারে এসেছে। আপনি সেই মোবাইলের একটা রিভিউ করে সেই মোবাইলের এপিলিয়েট লিংক দিতে পারেন।
এতে করে আপনার দর্শকরা এই মোবাইলটি কিনতে উদ্ভুদ্ধ হবে। আর তারা যদি আপনার এপিলিয়েট লিংকে ক্লিক করে মোবাইলটি কিনে তাহলে আপনি সেখান থেকে ভালো একটি কমিশন পেয়ে যাবেন।
আবার আপনি সিম্পনি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে তাদের রিভিউ ভিডিও করার আগ্রহের কথা জানাতে পারেন। তারা আপনার চ্যানেল ও কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট হলে আপনাকে তারা রিভিউ করার জন্য পেমেন্ট দিবে। এভাবে আপনি ভালো একটা ইনকাম করতে পারবেন।
আপনার নিজের বানানো কোনো পণ্য থাকলে সেটা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারেন। এতে আপনার ভালো একটি আয় হবে।
যেমনঃ আপনার চ্যানেলের লগোযুক্ত টি-শার্ট পরে আপনি একটি ভিডিও করলেন। আর ভিডিও শেষে বলে দিলেন, “আপনারা যারা আমার পরা টি-শার্টটি কিনতে চান তারা ভিডিও ডিস্ক্রিপশনে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে কিনতে পারেন”।
এভাবে আপনি বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে পারেন। আমি একটি উপায় বললাম। আপনি অন্য কৌশলেও বিক্রি করতে পারেন।
আশা করি লেখাগুলো একটু হলেও আপনার উপকার করেছে। কেমন লাগলো? কমেন্ট করে জানাবেন। কোনো কিছু বুঝতে সমস্যা হলেও জানাতে পারেন। আমি রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করবো।