শুটকি তৈরিতে ব্যস্ত সিরাজগঞ্জের চলনবিলের মানুষ

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


মোঃ মাহবুবুর রহমান, সিরাজগঞ্জ॥ শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিরাজগঞ্জের চলন বিলের মানুষ। এ অঞ্চলের তিন শতাধিক শুঁটকি চাতালে দেশি প্রজাতির মাছের শুটকি তৈরি করছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। মৎস্য ভাণ্ডার খ্যাত চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, ফরিদপুর, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, ভাঙ্গুড়া, পাবনার চাটমোহর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

শুটকি ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম বলেন, এ ব্যবসায় অনেক লাভ। সারাদেশে চলনবিলের মাছের শুঁটকির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ বছর বিল এলাকায় কম পানি থাকায় প্রচুর পরিমাণে টেংরা, পুঁটি, মলা, ঢেলা, চিংড়ি, বাতাসী, চেলা, টাকি, বোয়াল, চিতল, শিলং, রুই, কাতলাসহ বিভিন্ন ধরনের মাছ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া এখন মাছের দাম কমও অন্য কোন কাজ না থাকায় শ্রমিক, কৃষক ও ব্যবসায়ী সবাই শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

বিভিন্ন চাতালে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিটি চাতালে নারী-পুরুষ মিলে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এ কাজে নারী শ্রমিকরা বেশি দক্ষ বলে চাতালগুলোতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

প্রতি তিন কেজি কাঁচা মাছ থেকে এক কেজি শুঁটকি তৈরি হয়। প্রতি মণ কাঁচা মাছ চার হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দরে কেনা হয়। এসব শুটকি প্রকারভেদে প্রতি মণ ১২০০০ থেকে ২০০০০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি হয়। মাছগুলো চাতালে নেয়ার পর বাজারজাত করতে মাসখানেক সময় লাগে বলে ব্যবসায়ীরা জানান ।

বড়পাঙ্গাসী এলাকার জেলে আইয়ুব আলী ও মোহনপুরের শাহজাহান শেখ জানান, শুকনো মৌসুমে তারা ক্ষেতে খামারে কাজ করেন। বর্ষা মৌসুমে কাজ না থাকায় রাতভর খরা জাল দিয়ে চলনবিলে মাছ শিকার করেন। অনেকে মাছ শিকারের পর আড়তে বিক্রি করেন। সেই মাছগুলো যায় শুঁটকির চাতালে।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহেদ আলী বলেন, গত বছর এ এলাকায় ৯৫ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর পোনা নিধন অভিযান জোরদার এবং বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় মাছের প্রাচুর্য বেড়েছে। যে কারণে চলনবিল এলাকায় এবার মাছের উৎপাদন আগের তুলনায় বেশী। এ বছর শুঁটকি উৎপাদন আরো বাড়বে। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে তিনি আরও জানান।

IT Amadersomaj