সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধে পি আইসি কমিটি গঠনে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ৮ মাস আগে


 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার হাওররক্ষা বাঁধের কাজের প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত কৃষকদের একটি লিখিত অভিযোগ তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রেরন করা হয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার মাটিয়ান, শনিসহ ছোট বড় ২৩টি হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ অনিয়ম দুর্নীতি, প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এক এলাকার লোক অন্য এলাকায় নিয়ে পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়েছে।একই বাড়িতে একাদিক পি আইসি কমিটি দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় কৃষকদের সুযোগ না দিয়ে বহিরাগত অযোগ্য, অদক্ষ ব্যক্তিদের কমিটিতে যুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে হাওর পাড়ের কৃষকদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। সময় মতো বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করছেন কৃষকরা।

সূত্রে জানায়, উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের পাটাবুকা গ্রামের শাহাব উদ্দিন ৪ নং পি আইসি কমিটির সভাপতি তার আত্বীয় স্বাজল মিয়া তাহিরপুর সদর ইউনিয়নে রতন শ্রী গ্রামে বসত বাড়ী থাকে করা হয়েছে সদস্য সচিব। পি আই সি নং ১৮ সভাপতি হাবিবুর, গ্রাম পাড়াবেকই, বর্ধীতঘোরমার হাওরে জমি নেই। ৭ নং পি আইসি সভাপতি আলাল উদ্দিন গ্রাম লামাগাও,১৫ নং পি আইসি কমিটি সভাপতি ফটিক মিয়া, তাদের কারও জমি নেই বর্ধীত ঘোরমার হাওরে।

৪,৭,১৫,১৮, নম্বর পিআইসি কমিটি উপজেলার এসও কে মোটা অংকের টাকা দিয়ে বাগিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগে উঠেছে।

শনি এবং মাটিয়ান ঘোরমার হাওরে মোট পিআইসি ৮২ টি। এর মধ্যে মাঠিয়ান হাওরে ৩৯টি, শনির হাওর, ১০টি, গুরমার বর্ধীতাংশ ২৫টি মহালিয়া হাওরে ৪টি, হালির হাওরে ২টি এবং আঙ্গারওলী হাওর ২টি। নিয়ম অনুযায়ী ৩০ শে নভেম্বরের মধ্যে জরীপ কাজ শেষ করে ১৫ ডিসেম্বর বাধের কাজ শুরু হওয়ার কথা এবং ২৮ শে ফেব্রুয়ারীর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।

প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অমল কান্তি কর বলেন, অন্যান্ন বৎসর পি আইসি কমিটি গঠনে মনিটরিং কমিটির পরামর্শ নিলেও , এই বৎসর মনিটরিং কমিটির সদস্যদের না জানিয়ে রাতারাতি করে এসও এবং সংশ্লিষ্টরা পি আইসি কমিটি গঠন করেছে যাহা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী। এসওর দুর্নীতিকে বৈধ করার জন্য পিআইসিদের সাথে কোন ধরনের চুক্তিপত্র ছাড়াই চেক হস্তান্তর করছে তার কারন কি? হাওরের কোন ক্ষতি হলে এর দায়ভার তাদেরকেই নিতে হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মনিটরিং কমিটির সদস্য আবুল হোসেন খান বলেন,অন্যান্ন বৎসর কৃষকদের পরামর্শ নিয়ে এবং মনিটরিং কমিটিতে আলোচনা করে পি আই সি কমিটি গঠন করা হয়। এই বৎসর পি আইসি কমিটি গঠন করা হয়েছে আমরা মনিটরিং কমিটির লোকজন কিছুই জানিনা।আমাদের কৃষকদের এক ফসলী জমি যদি কারো দুর্নীতি অবহেলার কারনে ক্ষতি হয় তাহলে এর দায়ভার এসও সহ সংশ্লিষ্টদের নিতে হবে।

দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, পাঠাবুকা গ্রামের মাসুক মিয়া জানান, ‘যাদের কাজ করার সামর্থ ও অভিজ্ঞতা নেই তাদের এবার পিআই কমিটি দেওয়া হয়েছে। বর্ধীত গোরমায় জমি নেই অন্য জায়গা হতে লোক এনে পি আই সি কমিটি দেওয়া হয়েছে। অথচ এই হাওরে যাদের জমি আছে তাদেরকে পিআইসি কমিটি দেয়া হয়নি। এতে ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ ঝুঁকিতে রয়েছে।এসও মনির আমাদের হাওর পারের মানুষের জীবন নিয়ে চিনিমিনি খেলছে সে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পি আই সি কমিটি দিয়েছে আমরা হাওরবাসী এর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।

মাঠিয়ান হাওর পারের কৃষক,আব্দুল আমিন বলেন, প্রতি বছর নিতিমালা অনুযায়ী গনশুনানীর মাধ্যমে পিআইসি কমিটি গঠন করা হয়। এই বৎসর গনশুনানী করার পর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব (এসও) মনির দালালের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষককে বাদ দিয়ে এক লাখ টাকার বিনিময়ে তার প্রছন্দমতো লোকদের নিয়ে তিনি পিআইসি কমিটি গঠন করেন। যা নিতীমালা বহির্ভূত।আমি এই দুর্নীতিবাজ এসওর বিরুদ্ধে মামলা করবো, এসওর দুর্নীতির কারনে বাধের কোন ক্ষতি হলে এর দায় দায়িত্ব কে নেবে।

হাওর বাঁচাও তাহিরপুর উপজেলা যুগ্ম আহ্বায়ক তুজাম্মেল হক নাছরুম জানান, যদি কোন পিআইসি নিয়ে বিতর্ক কিংবা অভিযোগ ওঠে, তাহলে এগুলো যাচাই-বাছাই করে দেখা প্রয়োজন। প্রকৃত কৃষকরা যদি বাঁধের কাজ পায় তাহলে হাওরে কাজ ভাল হবে।আমরা শুনেছি এসও টাকার বিনিময়ে এক এলাকার মানুষকে অন্য এলাকায় নিয়ে বাধের কাজ দিয়েছে, যেটা কখনো গ্রহনযোগ্য হতে পারেনা।এটা তদারকি করে বাধের কাছের প্রকৃত কৃষক কে পি আইসি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হউক।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব (এসও) মনির হোসেনের মোবাইলে ফোন করলে তিনি ফোন ধরেন না যার কারনে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন বলেন, আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে আমরা তদন্ত করে ব্যাবস্থা নেব।

IT Amadersomaj