স্কুলের শ্রেণিকক্ষ প্রধান শিক্ষকের রান্নাঘর, রান্না করেন দপ্তরি

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১২ মাস আগে


মোঃ হাচিবুর রহমান, কালিয়া (নড়াইল): নড়াইলের নড়াগাতী থানার বাঐসোনা ইউনিয়নের ডুমরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ প্রধান শিক্ষকের রান্নাঘরে পরিণত হয়েছে। সরকারী নিয়ম উপেক্ষা করে স্কুল চলাকালীন সময়ে গ্যাস ও সরকারী বিদ্যুতে নিয়মিত চলছে রান্নার কাজ। এ ছাড়া প্রায়ই প্রধান শিক্ষক পিকনিক করেন বলে জানা গেছে।

২৬ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুরে সরেজমিনে ঐ স্কুলে গেলে দেখা যায় ওই স্কুলের দপ্তরী ফিরোজুর রহমান স্কুরের একটি শ্রেনীকক্ষে রান্নার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন এবং প্রতিদিন তিনিই রান্না করেন বলে জানান। এ ছাড়া পাশেই জসিমউদ্দিন কক্ষে রাখা হয়েছে পাট। অন্য রুমে চলছে তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস। কোন দুর্ঘটনা ঘটলে এ দ্বায় কার? প্রশ্ন এলাকাবাসীর?

স্থানীয়রা জানান, প্রধান শিক্ষক প্রতিদিন দুপুরে দপ্তরি ফিরোজুর রহমানকে দিয়ে রাইচকুকার ও গ্যাসের চুলায় রান্না করান।এছাড়া মাঝে মাঝে বহিরাগত লোকদের নিয়ে স্কুল চলাকালীন সময়ে পিকনিক করে খাওয়া দাওয়া করেন।২৬ সেপ্টেম্বর (সোমবার) স্কুলের বর্তমান সভাপতি সোহেল মোল্যা ও প্রধান শিক্ষকের প্ররোচনায় স্কুল চলাকালীন পিকনিকের আয়োজন করা হয় এবং ওই খাবার কোমলমতি শিশুদের বঞ্চিত করে তাদের সামনেই সভাপতি ও শিক্ষকেরা খেয়ে নেয়। স্কুল ছুটি হলে ছাত্র-ছাত্রীরা বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানালে সামর্থবানরা তাদের সন্তানকে ওই খাবার তৈরী করে খাওয়ায়। প্রধান শিক্ষকের এমন দায়িত্বহীন কর্মকান্ডে স্থাণীয় ও অভিভাবক মহলে চলছে চরম ক্ষোভ।

এ বিষয়ে স্থানীয় মেম্বার ও অত্র স্কুলের সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, স্কুলে প্রায়ই প্রধান শিক্ষকের শুভাকাংখীদের নিয়ে স্কুল টাইমে পিকনিক চলে। গতকালের বিষয়টি ছেলে মেয়েরা বললে আমরা জানতে পারি। প্রধান শিক্ষকের অনেক ক্ষমতা তাই আমরা কিছু বললেও তিনি আমলে নেন না।

অত্র বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি মোঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, পিটিএ সভাপতির কি কাজ প্রধান শিক্ষক আমাকে আজও অবহিত করেনি। আমাকে আড়াল করে অনেক মিটিং হয়। আমাদের এই স্কুলে প্রতিনিয়ত অনেক অনিয়ম চলে। এখানে কিছুদিন পর পর ভালো ভালো রান্না করে যার ঘ্রান রাস্তা পর্যন্ত চলে আসে। স্কুলের সামনে দোকানে গিয়ে তারা বলে। তাদেরও খেতে মন চায়। এছাড়া দপ্তরীকে বাবুর্চির দায়িত্ব প্রদান করে নিয়মিত দুপুরে রান্না হয়। পাশেই ক্লাসরুম, কোন অঘটন ঘটলে এ দ্বায় কে নেবে? এটাতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কোন হোটেল নয়, এটা ওনাদের বুঝতে হবে।

ক্লাস ওয়ানের ছোট্ট শিশু বলেছে, স্কুলের স্যারেরা তাকে খাবর দেয় নি। তার মনে চেয়েছিল খেতে। বাড়ী গিয়ে তার মাকে বললে রান্না করে খাইয়েছে।

প্রধান শিক্ষক চৌধুরী নাজির আহমেদ দুপুরের খাবার স্কুলেই রান্না করে খাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গতকাল স্কুলে কোন পিকনিক হয়নি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একটি সৌজন্যমুলক খাবারের আয়োজন করেছে দপ্তরীকে দিয়ে রান্না করে খাওয়া হয়েছে বলে জানান। এ ছাড়া মাঝে মাঝে পিকনিকের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করলেও গভার্নিং বডির সদস্যও স্থাণীয়রা পিকনিক হয় বলে জানিয়েছেন।

গভর্নিং বডির সভাপতি মোঃ সোহেল বলেন, যোগানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ আমার নিকট খাইতে চেয়েছে। স্কুল গ্রাউন্ডে রান্না করে খাওয়ার নিয়ম নেই এটা আমার জানা ছিলনা।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বাসুদেব কুমার সানা বলেন, স্কুল গ্রাউন্ডে কোন পিকনিক বা নিয়মিত রান্না করে খাওয়ার কোন অনুমতি নেই। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

IT Amadersomaj