স্ত্রীকে কুপিয়ে ভারতীয় নাগরিকের শেরপুরে আত্মগোপন, করেছেন বাংলাদেশী পাসপোর্ট 

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


কাকন সরকার শেরপুর জেলা প্রতিনিধি॥ ভারতের পশ্চিমবাংলা প্রদেশের কোচবিহার জেলার দিনহাটা মহকুমা সদরের ৭ নং ওয়ার্ডের বোডিং পাড়ার বাসিন্দা টগরি মোদককে তার স্বামী বিপুল মোদক কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অভিযোগ উঠেছে। এদিকে গুরুতর আহত টগরি মোদককে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে আশংকা জনক অবস্থায় কোচবিহার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর।

এদিকে স্বামী বিপুল মোদক স্ত্রীকে কুপিয়ে চলে আসে বাংলাদেশের তার পৃর্ব পুরুষের ভিটে শেরপুরের শ্রীবর্দী উপজেলার ঝগড়ার চর গ্রামে। ঘটনাটি জানাজানি হলে তার পৈত্রিক শরীকরা কেউ আশ্রয় দেয়নি। চলে আসেন জেলা শহরের বাড়ই পাড়া মহল্লায়। সেখানে হিন্দু পাড়ায় পরিচয় গোপন করে একটি ঘর ভাড়া নেন। টগরি মোদক হত্যা চেষ্টার একটি এবং তার পিতা রবীন্দ্রনাথ মোদক একটি মামলা দায়ের করেছেন দিনহাটা থানায়।

বিপুল মোদকের আত্নীয়স্বজনের কাছ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার ঝগড়ার চর গ্রামের মোদক পাড়ার হরি মোহন মোদকের ছেলে বিপুল মোদক পৈত্রিক ভিটে বিক্রি করে ৯০ দশকে ভারতের পশ্চিমবাংলার কোচবিহার জেলায় চলে যায়। সেখানে দিন মজুরের কজ করে বসবাস করতে থাকে বিপুল মোদক এবং ভারতের আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও পিন কার্ড, পাসপোর্টসহ সকল কাগজপত্র করে ভারতীয় নাগরিক হয়ে যান তিনি। পৈত্রিক পরিচয়ে সেখানের দিন হাটা মহুকুমা শহরের বিয়ে সংসারও করতে থাকে বিপুল মোদক। সেখানে তার স্ত্রীর সাথে নানা বিষয়ে ঝগড়া ফ্যাসাদের এক পর্যায়ে ২০২১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বাংলাদেশে এসে আত্ম গোপন করে। এরপর বিপুল মোদক গোপনে শেরপুরের বিভিন্ন স্থানে বসবাস করে এবং বাংলাদেশের শ্রীবর্দী উপজেলার ভেলুয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন কাগজ তৈরী করে ফের বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে নতুন করে আইডিকার্ড, পাসপোর্টও তৈরী করেন।

বিপুল মোদকের বৌদি ঝগড়ারচড় এলাকার বাসিন্দা বিউটি রাণী মোদক বলেন, আমার দেবর বিপুল ২৫ বছর আগে তার বাবার সম্পত্তি বিক্রি করে ভারতে চয়ে যায়। সেখানেই সে বিয়ে করে সংসার শুরু করে এবং তাদের একটি কন্যা সন্তান আছে। ভারতের পশ্চিম বাংলার দিনহাটায় আমাদের আত্নীয়স্বজনের কাছে জানতে পারি বিপুল তার স্ত্রীকে মেরে পালিয়েছে।

এছাড়াও ঝগড়ারচড়ে তার বাবার বিক্রি করে যাওয়া জমির মালিককে তার ওয়ারিশ আছে বলে হুমকি ধমকিও দিয়ে আসছে বলে জমির মালিক লুৎফর রহমান জানান।

ভারতের দিন হাটার সাংবাদিক ব্রজেশ কুমার মুঠোফোনে বলেন, বিপুল মোদক তার স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার নিউজটি আমি করেছিরাম। তখন থেকেই সে পলাতক রয়েছে। তবে দুই দেশের সরকারের উচিত বিপুল মোদককে আইনের আওতায় আনা এবং দৃষ্টান্ত মোলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।

টগরি মোদক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, বিপুলের সাথে আমার বাড়ির জমি বিক্রি নিয়ে ঝগড়া চলছিলো। বিয়ের পর থেকেই আমাকে সংসার চালানোর খরচ দিতো না। হঠাৎ একদিন সে বাড়িতে চলে আসে এবং রাতে ঘুমের মধ্যে আমাকে সবজি কাটা দা দিয়ে কুপাতে থাকে। আমার মেয়ের চিৎকারে লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে এবং বিপুল পালিয়ে যায়।

বিপুল মোদকের কাছে স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে সবকিছু অস্বীকার করেন। তবে ভারতের দিন হাটায় থাকতেন এবং সেখানে একটি স্থানীয় নাগরিক হয়ে আইডি কার্ড, পাসপোর্ট করার কথা এবং বাংলাদেশে এসে এখানের পাসপোর্ট করার কথা স্বীকার করেন।

বিপুলের বিষয়ে জেলা পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কোন বক্তব্য দিতে না চাইলেও শ্রীবর্দী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানায়, বিষয়টি তার জানা নাই। খোঁজ খবর নিয়ে জেনে আমার উর্দ্ধতন স্যারদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



Source link

IT Amadersomaj