১০ বেত্রাঘাতে বদলগাছীতে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ ধামাচাপা

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


এনামুল কবীর এনাম, স্টাফ রিপোর্টার॥ নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মিঠাপুর ইউপির মিঠাপুর (নতুন পাড়া) গ্রামের সিদ্দিকের স্ত্রী মিনা বেগম (৩০) কে একই গ্রামের মৃত সামাদ মন্ডলের ছেলে ওয়াহেদ আলী (৫০) কর্তৃক ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। উক্ত অভিযোগটি ধামাচাপার চেষ্টা তোপের মুখে মাতব্বর গ্রাম শালিশে বেত্রাঘাত।

জানা গেছে গত ২৮ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ৮ ঘটিকায় সিদ্দিকের স্ত্রী মিনা বেগম তার পরিবারিক কাজ করছিলেন। এমন সময় ওয়াহেদ আলী সিদ্দিকের বাড়ীতে গিয়ে মিনা বেগমের সাথে গরুর মাংস কেনা বিষয়ে গল্প করেন এবং সিদ্দিক বাড়িতে আছে কিনা জিজ্ঞাসা করেন।

মিনা বেগম নিজ কাজে ঘরের ভিতরে গেলে ওয়াহেদ আলী সুযোগ বুঝে তার পিছনে পিছনে গিয়ে ঘরের ভিতর আকস্মিক  আবেগ প্রবনে ঝাপটে ধরে জবরদস্তী ভাবে ধর্ষণের চেষ্টা করে। ঘটনাটি সন্দেহ হলে সিদ্দিকের বড় ভাই আব্দুস সালাম মিনা বেগমের শয়ন কক্ষে প্রবেশ করেন এবং আপত্তিকর অবস্থায় আলিঙ্গন করতে দেখতে পায়ে নিজে স্থির থাকতে না পেরে সালাম দড়জার পার্শ্বে থাকা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে আঘাত করলে ওয়াহেদ আলী দ্রুত ঘটনার স্থান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।

বিষয়টি গোপনে গ্রামের কতিপয় মাতব্বর সুকৌশলে ধামাচাপার চালানোর চেষ্টা করে কিন্তু বেশি ভাগ গ্রামবাসীর তোপের মুখে পড়ে গ্রামের মাতব্বর। গ্রামের অধিকাংশ গ্রামবাসী আগামী কুরবানি সমাজ ভিন্ন করার হুমকি সহ মসজিদের ধান দিতে অস্বীকৃতি জানালে গ্রাম কমিটি বিচার করতে বাধ্য হন। গ্রামের যুব সমাজ সহ অধিকাংশ গ্রামবাসীর মৌখিক তোপের মুখে মিঠাপুর নতুন পাড়া গ্রাম কমিটি গত ৪ জুন রাত ৯ টায় মসজিদের খলিয়ানে গ্রাম্য শালিসের বৈঠক বসান। সেখানে ঐ গ্রামের সাবেক মেম্বার কছির উদদীনের পরিচালনায় শালিসটি শুরু হলে বিভিন্ন কথার একপর্যায়ে অভিযুক্ত ওয়াহেদ আলী ও ভিকটিম মিনা নিজ নিজ অপরাধের পুনরাবৃত্তি স্বীকার করলে উপস্থিত স্বচেতন মহল দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা সহ ১০ টি করে বেএাঘাতের রায় প্রদান করেন।

ইসলামের বিধান মতে অভিযুক্ত ওয়াহেদ আলী কে মিঠাপুর নতুন পাড়া মসজিদের ইমাম মাওলানা খোরশেদ আলম, একই গ্রামের মাওলানা মোঃ আঃ ছাত্তার ৫ টি করে ১০ টি বেএাঘাত করেছেন মর্মে গ্রাম বাসি সুএে জানা গেছে। ভিকটিম মিনা খাতুন কে তার স্বামী সিদ্দিক ১০ টি বেএাঘাত করেন। এভাবেই গ্রাম কমিটি গ্রাম বাসির তোপের মুখে আপোষ মিমাংসা করলেন।

গ্রাম কমিটির সভাপতি মোজাম্মেল হক জানান বিচার না আমরা গ্রামবাসী তাকে লজ্জা দেওয়ার জন্য, দুই জন মাওলানার দ্বারা এই কাজ করেছি। আনোয়ার হোসেন বলেন, দরবারে নিজ নিজ অপরাধ স্বীকার করলে দুই জন আলেম দ্বারা সমাধান করেছি। নজরুল, ফারুক, মিম জানান যতটুকু হয়েছে তাহা গ্রাম বাসির তোপের মুখে। কারণ ইতিপূর্বে ও আদিবাসী সমিতির সাথে অনুরূপ ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত ঈসা নামের শিশু বর্তমানে তার বয়স ১৪ বছর। ঈসা বলে কে আমার পিতা।

জানা যায়, অভিযুক্ত ওয়াহেদ আলীর সহধর্মিণী হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ কারী শিক্ষিকা, ভাই মাওলানা আঃ রশিদ রুকুনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ছোট ভাই ও গয়ড়া তেতুলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক। স্হানীয় এলাকাবাসী জানান ভাই ও বউয়ের সন্মান বারংবার নষ্ট করে সেই সাথে গ্রাম বাসী বাজারে অসম্মান হন মর্মে ই তাকে লজ্জা দিতেই শালিস। বর্তমানে গ্রামে আর চাপা উত্তেজনা নেই বলে অধিকাংশ গ্রামবাসী সুএে জানা যায়।

স্থানীয় ভ্যানচালক মিঠুর বলেন, ঘটনা সত্য শুধু এই ঘটনা নয় ইতোপূর্বে একই গ্রামের আদিবাসী মহিলা সুমিতি রাণী কে ২০০৮ সালে তার লালসার স্বীকার বানিয়েছিল। এবং সুমিতা রাণীর ঘরে ওয়াহেদ আলীর ঔরসজাতক একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে। উক্ত ছেলের নাম মোঃ ঈসা। এখন সেই ছেলের বয়স প্রায় ১৪ বছর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, ওয়াহেদ আলী ইতোপূর্বে ও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছিলেন, গ্রাম্য সালিশে দফা-রফার মধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল। কি বলিব দুঃখের কথা বুকটা যায় ফাটিয়া ঐরসজাতক সন্তান এখন পথে পথে ঘুরছে। আমরা এলাকাবাসী বর্তমান ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছিলাম।

এ বিষয়ে মিনা বেগম বলেন, আমি ঘরের মধ্যে ছিলাম পিছন থেকে ওয়াহেদ আলী আমাকে ঝাপটে ধরিয়া ধর্ষণের চেষ্টা করলে আমার ভাসুর সালাম লাঠি দিয়ে এলোপাতারি ভাবে আঘাত করলে ওয়াহেদ আলী পালিয়ে যায়।

ঘটনার স্বাক্ষী আব্দুস সালাম বলেন, আমি সিদ্দিকের বাড়ীর পাশ দিয়ে আসার সময় দেখি মিনার সাথে ওয়াহেদ আলী গল্প করছিল। বাড়ীতে আসার পর মনে সন্দেহ হলে আবার সিদ্দিকের বাড়ীতে দক্ষিণ দুয়ারী শয়ন ঘরে মিনা ও ওয়াহেদকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পেয়ে দরজার পাশে থাকা লাঠি দিয়ে মারপিট করতে থাকলে ওয়াহেদ আলী দৌড়ে পালিয়ে যায়।

ধর্ষণ চেষ্টাকারী ওয়াহেদ আলীর বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি মুঠোফোনে বারংবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হারুনুর রশিদ বলেন, শুনেছি ঘটনা সত্য। আপোষ মিমাংসার করে দেওয়া জন্য ওয়াহেদ আলীর ভাই মাওলানা আঃ রশিদ যোগাযোগ করেছিল। দীর্ঘ দিন পর গ্রাম বাসীর তোপের মুখে মাতব্বরগন গত ৪ জুন রাতে মিমাংসা করেছেন।



Source link

IT Amadersomaj