ময়মনসিংহে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালিত

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


এনামুল হক ছোটন॥ “peace begins with me” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস -২০২৩ পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ ময়মনসিংহ রেঞ্জের আয়োজনে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২৯ মে সোমবার সকালে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে টাউন হল মোড়ে তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়াম গিয়ে শেষ হয়।

বর্ণাঢ্য র‍্যালি শেষে দিবস পালন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি।

ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বিপিএম এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু, ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার মোঃ শফিকুর রেজা বিশ্বাস, ময়মনসিংহ সেনানিবাসের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল হাফিজুর রহমান, জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজার রহমান, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি বলেন, বাঙালি জাতি শান্তিপ্রিয় জাতি। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ জাতির কৃতি সন্তানদের রয়েছে স্বর্ণোজ্জল ভুমিকা। বিশ্বের বিভিন্ন বিবদমান জাতি গোষ্ঠীর বিবাদ মিমাংসা, সশস্ত্র বিদ্রোহ দমন ও সহিংসতা নিরসনে বাংলার সূর্যসৈনিকেরা কার্যকর ভুমিকা পালন করে আসছে। সাম্রাজ্যবাদ ও ফ্যাসিবাদের বিরোধিতা এবং মানবতা ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি স্বরুপ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। বাঙালির অধিকার রক্ষায় আজীবন সংরাম করেছেন জাতির এই কৃতি সন্তান। এজন্য পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার নির্যাতন, জেল জুলুমের শিকার হয়েছেন তিনি। তবুও শান্তির লক্ষ্যে তিনি ছিলেন পর্বতের মত স্থির আর ইস্পাতের মত দৃঢ়। ১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধ অবসানের পর ইরাকের মাটিতে স্থলমাইন অপসারনের মত ঝুকিপূর্ণ কাজের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মিশনে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ। এরপর জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সাথে কাজ করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশের ৫১২ জন সদস্যসহ ৭ হাজার ২৬৯ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন মিশনে কর্মরত আছেন। অদ্যাবধি বিভিন্ন মিশনে কাজ করতে গিয়ে এদেশের ১৬৬ জন শান্তিরক্ষী নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

তিনি আরও বলেন , বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ আজ তার সুযোগ্য উত্তরসূরী, তার আত্মজা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুরন্ত দুর্বার গতিতে উন্নয়নের পথে এগিয়ে  চলেছে। ১০ লক্ষের বেশী রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দান, পার্বত্য শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন, ভারতের সাথে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন, মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্র সীমানা নির্ধারণের মত দূরদর্শী কার্যাবলী তার হাতেই সম্পাদিত হয়েছে যা দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভুমিকা পালন করবে। দেশের ভিতরে ও বাইরে গনতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় তিনি আজীবন সংগ্রাম করে চলেছেন। একারনে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বারবার হামলা করেছে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র। তাতেও দমে যাননি শেখ হাসিনা। নিজের জীবন বাজী রেখে সকল প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তিনি আপোসহীন কাজ করে চলেছেন মানুষের কল্যানে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আরো সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা পালনে সক্ষম হবে বাংলাদেশ, এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।

সভাপতি দেবদাস ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, জাতিসংঘ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের কাজে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ তাদের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা, ধর্ম-বর্ণ ও নারী-পুরুষের প্রতি সংবেদনশীল ও শ্রদ্ধাশীল থেকে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সফল ও সুনামের সহিত কাজ করছে, যা শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশকে রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানী ঢাকাসহ প্রতিটি বিভাগীয় শহরে সকল শান্তিরক্ষীকে সম্মান প্রদর্শন করার জন্য ২০০৩ সাল হতে এই দিনটি পালিত হয়ে আসছে। ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশও যথাযথ সম্মানসহ এই দিনটি উদযাপন করে আসছে এবং উপস্থিত সকলকে প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন মোঃ এনামুল কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ), রেঞ্জ ডিআইজি’র কার্যালয়, ময়মনসিংহ এবং আবিদা সুলতানা, বিপিএম, পিপিএম, অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম), রেঞ্জ ডিআইজি’র কার্যালয়, ময়মনসিংহ, মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান, বিপিএম, অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি), র‍্যাব-১৪, ময়মনসিংহ, পুলিশ সুপার, নেত্রকোণা, পুলিশ সুপার জামালপুর, পুলিশ সুপার শেরপুর, সকল থানার অফিসার ইনচার্জ সহ অন্যান্য আমন্ত্রিত অতিথিগণ ও সাংবাদিকবৃন্দ।

IT Amadersomaj