কর্ণফুলীতে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আসামী যুবলীগ নেতা, গ্রেফতার-৩

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


কর্ণফুলী, প্রতিনিধি॥ চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার খোয়াজনগর গ্রামের রাজমিস্ত্রী কন্ট্রাক্টর আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৫) নামের যুবককে কিছু দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে গুরুতর আহত করার সময় প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে আরেক গ্রাম ইছানগরে অবস্থান করেও মামলায় ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা মো. ইমরান পাটোয়ারী (২৯) কে প্রধান আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

গত বুধবার রাত ১১ টা ২০ মিনিটে কর্ণফুলীর চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর গ্রাম (৬ নম্বর ওয়ার্ড) এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটায়।

পর দিন ভিকটিমের স্ত্রী তাসলিমা আকতার (১ জুন) বিকেলে ৫ জনের বিরুদ্ধে সিএমপির কর্ণফুলী থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলায় আসামিরা হলেন-ইমরান পাটোয়ারি (২৯), মো. তারেক পাটওয়ারী (২৪), হাসান আহমদ (২১), মো. হৃদয় পাটোয়ারী (২৪) ও মো. জাহাঙ্গীর পাটোয়ারী মেম্বার (৪১)। ঘটনার দিন রাতেই ইমরানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

প্রতিবেদক কে চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান পাটোয়ারী (২৯) এর স্ত্রী সালমা খানম মুক্তা (২৭) বলেন, ‘‘আমার স্বামী রাত ৯টা ৫৩ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন। এরপর ঘুমিয়ে যান। রাত ৩ টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ এসে ঘুম থেকে ডেকে আটক করা পর্যন্ত বাসায় ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে সব প্রমাণ রয়েছে।’

‘ওইদিকে ঘটনা ঘটেছে নাকি রাত ১১টা ২০ মিনিটে। তাহ‌লে তিনি কীভা‌‌বে আসামি হলেন। আর এ দি‌য়েই প্রমা‌ণিত হয় মামলা‌টি ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা। অর্থাৎ এখা‌নে আমা‌র স্বামীকে মি‌থ্যে মামলা দি‌য়ে ফাঁসা‌নো হ‌য়েছে। বাসায় ঘুমিয়ে থেকেও প্রধান আসামি হয়েছে। বিষয়টি সিএমপি কমিশনার মহোদয়ের এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শাহরিয়ার মাসুদ ও চরপাথরঘাটা ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আজগর পাপন ডিউক বলেন, ‘ইমরানের বিষয়টি ষড়যন্ত্রমূলক ও মিথ্যা মনে হচ্ছে। কারণ ঘটনার আগে আমরা তিন জন অর্থ্যাৎ ৩১ মে ৯ টা ২৯ মিনিটে আনোয়ার সিটির ক্যাফে নিসাম রেস্টুরেন্টে ছিলাম। এরপর ইমরান বাসায় চলে যান। তাঁকে হয়তো মি‌থ্যে মামলায় ফাঁসা‌নো হ‌য়েছে।’ প্রতিবেদক তাঁদের কথারও সত্যতা পেলেন নিসাম রেস্টুরেন্টের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখে।

অপরদিকে, ‘কর্ণফুলী কম্পিউটার’ নামক দোকানের আইটি টেকনিশিয়ান সরোয়ার খান বলেন, ‘ইমরানের পরিবারের সদস্যরা তাঁদের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করার জন্য আমাকে ডেকে নিয়ে যান। আমি তাঁদের সিসিটিভি ক্যামেরার সবগুলো ফুটেজ যাচাই বাছাই ও বিচার বিশ্লেষণ করে দেখতে পেলাম, ‘৩১ মে রাত ৯ টা ৫৩ মিনিটে ইমরান ইছানগরে নিজ বাসায় প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও কন্টিনিউ ছিলো কারণ তাঁর বাসায় আইপিএস এর ব্যবস্থা ছিল। বাসায় প্রবেশের পর থেকে তাঁকে আর বের হতে দেখা যায়নি। পরে ৩ টা ৫৫ মিনিটে একদল পুলিশ কে ইমরানের বাসায় প্রবেশ করতে দেখা যায়।’

মামলার এজাহার সূত্রে ঘটনা উল্লেখ রয়েছে, ১১.২০ মিনিটে প্রধান আসামি ভিকটিমকে ধারালো ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করেছেন। অথচ সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বলছে ওই সময় প্রধান আসামি তাঁর বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘মামলার প্রাথমিক তদন্ত চলছে। সম্পৃক্ততা না থাকলে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হবে ।’

এ প্রসঙ্গে সিএমপি বন্দর জোনের উপ পু‌লি‌শ ক‌মিশনার (ডিসি) শাকিলা সুলতানা বলেন, ‘ভিকটিমের স্ত্রী বলেছেন ইমরান হুকুমদাতা। আবার ভিকটিম আবদুল্লাহ আল মামুন বলেছেন ইমরান নিজেই তাঁকে কুপিয়েছেন। সুতরাং মামলা হ‌তেই পারে। ত‌বে মামলার তদ‌ন্তে সত্য ঘটনা বে‌রি‌য়ে আস‌বে। সেখা‌নে কেউ দোষী না হ‌লে তা‌ঁকে অব্যাহ‌তি দেয়া হবে।’

IT Amadersomaj