বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫৬ অপরাহ্ন

ঐতিহ্যের বাহন রিকশা কথন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট সময়: রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৯ টাইম ভিউ

পৃথিবীর প্রত্যেকটা শহরেই কিছু ঐতিহ্যবাহী বাহন থাকে। যেমন ব্রিটিশদের প্রতিষ্ঠিত প্রাচীন নগরী কলকাতা বিখ্যাত ট্রাম আর টানা রিকশার জন্য। কিছু কিছু শহর বিখ্যাত টিউব ট্রেন কিংবা বুলেট ট্রেনের জন্য। মধ্যপ্রাচ্য কিংবা রাজস্থান বিখ্যাত উটের বাহনের জন্য। এস্কিমোরা বিখ্যাত স্লেজ বা কুকুরের টানা গাড়ির জন্য। আর কিছু কিছু শহর বিখ্যাত নৌযানের জন্য। আর আমাদের রাজধানী ঢাকার ঐতিহ্যের বাহন হল রিকশা। রিক্সা তিন চাকার এক রঙ বেরঙের যান। ব্যস্ত নাগরিক জীবনের এক অপরিহার্য বাহন। রিক্সা ছাড়া নাগরিক জীবনের কথা যেনো বাংলাদেশে কল্পনাও করা যায় না। নিম্নবিত্ত বহু মানুষের ঘামে ভেজা ভরসার স্থল এ রিক্সা। মধ্যবিত্তদের সাধ ও সাধ্যের এক অপূর্ব সমন্বয়। চলুন ঐতিহ্যের এই রিকশা সম্পর্কে কিছু জেনে নেই।

রিকশার ইতিহাস

রিকশার উদ্ভব হয় ১৮৬৫ থেক ১৮৬৯ সালের মাঝে। পালকির বিকল্প হিসেবে এর উত্থান। জানা যায়, জোনাথন স্কোবি নামের একজন মার্কিন নাগরিক ১৮৬৯ সালে রিকশা উদ্ভাবন করেন। তিনি থাকতেন জাপানের সিমলায়। ১৯০০ সাল থেকে কলকাতায়ও এর ব্যবহার শুরু হয়। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে ১৯১৯ কিংবা ১৯২০ সালের দিকে মিয়ানমার হয়েই রিকশার আগমন ঘটে। তবে ঢাকায় রিকশা কিন্তু রেঙ্গুন থেকে আসেনি, এসেছে কলকাতা থেকে। নারায়ণগঞ্জ এবং ময়মনসিংহের পাট ব্যবসায়ীদের কল্যাণে। তারা তাদের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য কলকাতা থেকে ঢাকায় রিকশা নিয়ে আসেন। কোনো কোনো সূত্রমতে ঢাকাতে প্রথম রিকশার লাইসেন্স দেয়া হয় ১৯৪৪ সালের দিকে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় জ্বালানি সংকটের কারণে জাপানে রিকশার প্রচলন ব্যাপক বেড়ে যায়। যদিও এখন আর জাপানে রিকশা দেখা যায় না, জাদুঘর ছাড়া।

রিকশার আকার

রিকশার নগরী হিসেবে রাজধানী ঢাকার খ্যাতি বা পরিচিত বেশ পুরনো! বাংলাদেশ ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর ক্লান্ত চলাচল চোখে পড়ে। চীন, জাপান, ভারত, পাকিস্তান, মালোয়েশিয়া, ইউরোপের ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে রিকশা ঘুরতে দেখা যায়। দেশ ভেদে রিকশার আকার, গঠন প্রকৃতি ভিন্ন হয়। আবার বিভিন্ন দেশে এর নামও রয়েছে পৃথক। রিকশা চীনে সানলুঞ্চে, কম্বোডিয়ায় সীক্লো, মালোয়েশিয়ায় বেকা, ফ্রান্সে স্লাইকো নামে পরিচিত। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এটি পেডিক্যাব নামেও পরিচিত। প্রাচীনকাল থেকে জাপানেই রিকশার অস্তিত্ব জানা যায়। সেই রিকশাগুলো অবশ্য তিন চাকার ছিল না। একজন মানুষ রিকশাটি ঠেলে নিয়ে যেত। এ ধরনের রিকশাকে বলা হয় হাতে টানা রিকশা।

রিকশায় চিত্রশিল্প

বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে রিকশা চিত্রগুলো আমাদের গর্বের বিষয়। এটিকে চিত্রকলার একটি ধারাও বলা চলে। রিকশা চিত্র বলতে উজ্জ্বল রঙে আঁকা কিছু চিত্রকে বোঝানো হয়। সাধারণত বাংলাদেশ এবং ভারতেই রিকশার পেছনে এ ধরনের চিত্রকলা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষজ্ঞরা একে ফোক আর্ট, পপ আর্ট বা, ক্র্যাফটের মর্যাদাও দিয়ে থাকেন।  ১৯৫০ এর দশকে বাংলাদেশে রিকশাচিত্রের প্রচলন শুরু হয়। রিকশাচিত্রে ফুল-ফল, পশু-পাখি, নদী-নালা, প্রকৃতি এমনকি জনপ্রিয় নায়ক-নায়িকাদের ছবিও আঁকানো হয়ে থাকে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
স্বত্ব © ২০২৫ আমাদের সমাজ |