আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা: বরগুনার তালতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের অর্থ ও সিলিপসহ বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনে মঙ্গলবার ৪৮ জন প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র বিভিন্ন দফতরে দেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের অভিযোগ শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে উপজেলার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম ভেস্তে যাবে। তাকে অনাত্র বদলি করে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকরা।
জানা গেছে, ২০১৯ সালে মনিরুল ইসলাম তালতলী উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। এ বছর ২৬ জানুয়ারী তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পেয়েই তিনি নানাবিধ অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পরেন এমন অভিযোগ উপজেলা ৪৮ জন প্রধান শিক্ষকের। শিক্ষকদের অভিযোগ উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলাম বিদ্যালয়ের সিলিপ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেনেটর টাকা আত্মসাৎ ও বিদ্যালয় পরিদর্শনে ঘুষ গ্রহন করেছেন। তিনি শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করছেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের। তার এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে উপজেলার ৪৮ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে মঙ্গলবার অভিযোগ দিয়েছেন। শিক্ষকরা আরো অফিযোগ করেন টিও (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম সিলিপের বরাদ্দ টাকা উত্তোলন করতে অগ্রিম ২০% নেন। টাকা না দিলে তিনি সিলিপের বরাদ্দ টাকা উত্তোলনের কাগজে স্বাক্ষর দেয় না। তাকে টাকা না দিলে শিক্ষকদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করে। নিরুপায় হয়ে শিক্ষকরা তাকে ঘুষ দিয়ে আসছেন। অপর দিকে শিক্ষকদের বকেয়া বেতন থেকে তাকে সিংহভাগ টাকা দিয়ে হয়। এছাড়াও সম্প্রতি শেষ হওয়া বঙ্গবন্ধু- বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা তিনি ব্যয় না করেই সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ প্রধান শিক্ষকদের।
তাতিপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক ও আগা ঠাকুরপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ঘুষ ছাড়া কোন সেবা দেয় না উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম। সরকারী সকল বরাদ্দে তাকে ২০% টাকা ঘুষ দিতে হয়। নইলে তিনি কাগজে স্বাক্ষর করেন না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৪৮ জন প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছি। তাকে এখান থেকে না সরালে উপজেলার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে না। দ্রুত তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করে তাকে তালতলী থেকে অনাত্র বদলির দাবী জানান তারা।
তালতলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরুল ইসলাম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ দিয়েছেন। আমি সঠিকমত কাজ করছি।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।