ঝিকরগাছায় চুক্তিতে স্যাম্পল কৃষিবীজ দিয়ে ফুলকপি চাষ করে কৃষকের মাথায় হাত, উঠবেনা খরচ

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


শাহাবুদ্দিন মোড়ল, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে কোম্পানীর স্যাম্পল নিম্ন মানের বীজ দিয়ে চাষ। যার জন্য কারণে-অকারণে কৃষকের মাথায় হাত। কোম্পানির প্রতিনিধিদের মাধ্যমে চাষের জন্য স্যাম্পল হিসেরে বীজ দেওয়া হলেও কৃষকের সাথে কোম্পানীর প্রতিনিধিরা টাকার চুক্তি করে পরে মূল্য দেওয়ার কথা বলে চাষ করতে বাধ্য করা হয় বলে এলাকার একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ।

তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ঢাকার মল্লিকা সিড গ্রুপের মাসুম বিল্লাহ নামের এক প্রতিনিধির নিকট হতে উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের বোধখানা গ্রামের মৃত হরেন মাস্টারের ছেলে সমির ভৌমিক প্রায় দুই মাস পূর্বে নিজের ও লিজ নেওয়া সর্বমোট ১৫ কাটা জমিতে মল্লিকা সিড গ্রুপের সামার এ্যাডভান্স রেইন নামক ফুলকপির বিজ তিনি নিবেন না। তবুও কোম্পানীর প্রতিনিধি কোম্পানীর স্যাম্পল বীজ দিয়ে কৃষকের সাথে চুক্তি করে বলেন আপনি চাষ করেন, এখন আপনাকে বীজের মূল্য দেওয়া লাগবে না। আপনার জমিতে খুব সুন্দর ফুলকপি হবে। আপনি ফুলকপি বেঁচে আমাকে বীজের দাম দিবেন।

কোম্পানীর প্রতিনিধিদের মুখের এই মিস্টি কথায় কৃষকরা মজে গিয়ে ফুলকপির চাষ করতে গিয়ে চাষের জমিতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ করে এখন দেখা যাচ্ছে ফুলকপির মধ্য থেকে যে ফুল বের হচ্ছে সেটা ৩-৪টা একসাথে করলে একশ গ্রাম ওজন হবে। যেটা বাজারে বিক্রয়ের অনুপযোগী। বর্তমানে এই ফুলকপি গুলো হবে গৃহপালিত পশুর খাদ্য।

এই সংবাদ পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা তথ্য অনুসন্ধ্যানে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে উক্ত গ্রামের জমিতে গেলে কৃষকের ফুলকপির গাছ গুলো তুলে একস্থানে গোটো করা রয়েছে। ঘটনার বিষয়ে আরও জানা যায়, একই ইউনিয়নের ইউসুফ পুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন তিনিও ৪০-৪৫হাজার টাকা খরচ করে ১বিঘা জমিতে ও নাভারণেরও একাধিক চাষিরা তাদের এই কর্মকান্ড থেকে রেহায় পায়নি। যারা তাদের জমিতে মল্লিকা সিড গ্রুপের সামার এ্যাডভান্স রেইন নামক ফুলকপির বিজ চাষ করেছে তাদের সবার মাথায় হাত।

কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা টাকা দিয়ে ভালো বীজ কিনতে চাই। আমাদের নিকট থেকে কোম্পানী টাকা নিয়ে উন্নত মানে বীজ সংগ্রহ করেনা। এই বিষয়ে নিয়মিত কৃষি কর্মকর্তাদের বাজার তদারকি করতে হবে। না হলে আজ আমি, কাল আপনি ও পরশু আর একজন ঠকবে।

মল্লিকা সিড গ্রুপের প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ বলেন, কোম্পানীর বীজের প্রথম পর্যায়ে ভালো পাইছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে খারাপ হচ্ছে। আমি কোম্পানীকে অবগত করেছি। কোম্পানী হয়তো বলতে পারে তার পরে চাষের জন্য হয় তো ২প্যাকেট বিজ দিয়ে দিয়ো এটা। তখন স্যাম্পল বীজ দিয়ে টাকার চুক্তির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন উত্তর দেন না।

বোধখানা ব্লাকের উপ সহকারী কৃষি অফিসার আইয়ুব হোসেন বলেন, আমি অফিস সময়ে সব সময় এখানে থাকি। কিন্তু এই ফুলকপি চাষের বিষয়ে কিছু জানিনা।

উপেজলা কৃষি অফিসার মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, শীতকালীন ফসল গ্রীষ্মকালীন সময়ে কৃষকরা চাষ করছেন এটা থেকে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তবে বীজের বিষয়টা হলো কোম্পানীর সমস্যা। কোম্পানী থেকে ভালো বীজ বাজারে আসলে কৃষক সেটা কিনে নিয়ে ভালো ফসল তৈরী করতে পারবে। সেই সময় তার নিকট প্রতিনিধির কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তির তথ্য দেন আমি তাকে ডেকে কৃষকের ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

IT Amadersomaj