পদুয়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


কাইয়ুম চৌধুরী॥ নিজ জন্মস্থান চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের উত্তর পদুয়া গ্রামের মাটিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও পাঠকপ্রিয় একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার।

বুধবার (২ আগস্ট) বাদ আসর পদুয়া মদিনাতুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা মাঠে তৃতীয় নামাজে জানাযা শেষে পড়ন্ত বিকেলে পদুয়ার জল্যার বাপের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। এসময় পদুয়াবাসী সাংবাদিক আজাদ তালুকদারকে চিরকালের মতো বিদায় জানান।

আজাদ তালুকদার এর নামাজে জানাযায় অংশ নিতে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দূরদূরান্ত থেকে শতশত মানুষ পদুয়ায় এসেছেন। শেষ বিদায়ের মধ্য দিয়ে আজাদ তালুকদার যে গ্রামে বেড়ে ওঠেছেন, শৈশব কাটিয়েছেন, পড়শোনা করেছেন সেই গ্রামের মাটিতেই মিশে গেলেন।

এর আগে বিকাল সাড়ে পাঁচটায় তাঁর নামাজে জানাযায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আজাদ তালুকদারের স্মৃতি চারণ করে পদুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর বলেন, আজাদ তালুকদারকে নিয়ে গর্ব করি। কেননা আজাদ তালুকদার আমাদের এ মাটির সন্তান। সাংবাদিক আজাদ তালুকদার তাঁর সাহসী লেখনির মাধ্যমে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতেন। অসত্যের বিরুদ্ধে তাঁর কলম চলত অশ্বগতিতে। তিনি শুধু সাংবাদিকতা নয় সমাজসেবা ও সামাজিক সংগঠন গড়ে তুলেছেন। খায়ের জাহান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করে নিজ এলাকার মানুষের চিকিৎসা সেবা করেছেন। চেষ্টা করেছে নিজ উপজেলা রাঙ্গুনিয়ার মানুষের উপকার করতে, সেবা করতে। পুরো জীবনভর তিনি মানুষের কল্যাণে কাজ করেছেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের ভাই এরশাদ মাহমুদ বলেন সাংবাদিকতার এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের বিদায় হয়েছে আজ। তাঁর বিদায় এতো তাড়াতাড়ি হওয়ার কথা ছিলোনা। এ নক্ষত্রের কাছ থেকে দেশ ও সমাজের আরও বহু উপকার পাওয়ার কথা ছিল। তাঁর কর্মে এই দেশ, এই সমাজ ধারাবাহিকভাবে উপকার পাচ্ছিল। এ নির্ভিক কলম যোদ্ধার চির প্রস্থান আমরা, চলে যাওয়া আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। আজাদ তালুকদারের সঙ্গে ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে সেই ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের সম্পর্ক। তাঁর মতো সহজ-সরল, উপকারী মানুষ আমি খুবই কম দেখেছি। তাঁর মৃত্যুতে আমি দুঃখিত। আমাদের সমাজ ও দেশ দুঃখিত। এরশাদ মাহমুদ আরও বলেন, আজাদ তালুকদারের কাছ থেকে আমাদের এই সমাজের যতটুকু পাওয়ার ছিল তার পুরোটা আমরা নিতে পারিনি। আমরা যদি এই সমাজের জন্য ছোট ছোট উপকার করি তাহলে আমরাও আজাদ তালুকদার এর মতো বেঁচে থাকব মানুষের মাঝে।

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার বলেন, একুশে পত্রিকা সম্পাদক আজাদ তালুকদার একজন ক্ষনজন্মা পুরুষ। তিনি একজন নির্ভিক, সাহসী ও আদর্শিক সাংবাদিক ছিলেন। আমরা যতটুকু জানি তার চেয়েও বেশি নির্ভিক সাংবাদিক ছিলেন তিনি। সাহসী, আদর্শিক এ পুরুষ জন্ম বাংলার ঘরে ঘরে আরও জন্ম নিক সেই প্রত্যাশাই করি আমরা।

আজাদ তালুকদার এর চির বিদায়কালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গণি ওসমানীসহ পৌরসভা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগিতা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, চিকিৎসক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ, ছাত্রছাত্রী, সমাজসেবক, আজাদ তালুকদারের পরিবার বর্গের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

IT Amadersomaj