রাজধানীতে বড় সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


সময় সংবাদ রিপোর্টঃ রাজধানীতে আজ বুধবার বড় সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা। বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আয়োজিত এ সমাবেশে দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্র ও মহানগরের নেতারা বক্তৃতা করবেন। বিএনপির এক দফা কর্মসূচি নিয়ে আজ নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশের দিনে এ কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ। তবে এটিকে বিএনপির সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি বলতে নারাজ আওয়ামী লীগের নেতারা।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, থানা, ওয়ার্ডের নেতাকর্মীসহ দলের ভ্রাতৃপ্রতিম ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও সমাবেশ সফল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা মহানগর উত্তরের আয়োজনে আরেকটি সমাবেশ হওয়ার কথা রয়েছে রাজধানীর কারওয়ানবাজার এলাকায়। সেখানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এ ছাড়াও রাজধানীর প্রবেশদ্বারসহ পথে পথে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এর আগে পর পর কয়েকটি যৌথসভা করে দল ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সমাবেশ সফল করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, তারা রাজধানীর মানুষের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে সভা-সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। বিএনপি আন্দোলনের নামে সহিংসতায় জড়ালে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তুলে দেবে। আর বিএনপি নেতারা হামলা করতে আসলে পাল্টা হামলার প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।

জানা গেছে, বিএনপি ও সমমনা দলগুলো গত ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে লাগাতার আন্দোলনে আছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগও শান্তি সমাবেশের নাম দিয়ে পাল্টাসমাবেশ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুই দলকে মুখোমুখি হয়ে বড় কোনো সংঘাতে জড়াতে দেখা যায়নি। বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে- তারা দাবি বাস্তবায়ন না করে আন্দোলন থেকে ফিরবে না। এর বিপরীতে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, যত দিন, যখন, যেখানে কর্মসূচি দেওয়া হবে, আওয়ামী লীগ বিভিন্ন নাম দিয়ে রাজপথে থাকবে।

বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দেশে রয়েছেন। তারা ইতোমধ্যে দফায় দফায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আগামী কয়েক দিন তারা সিরিজ বৈঠক করবে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। দলীয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এই প্রতিনিধি দলকে দলের জনসমর্থন ও জন-জমায়েত দেখানোর কাজটিও করবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়াসহ উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশে এসেছেন। তাদেরকেও বিএনপির বিপরীতে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন ও সাংগঠনিক শক্তি দেখাতে চাইবে।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘নানাবিধ কারণে বিএনপি নেতাকর্মীরা রাজপথে সাহস দেখানোর চেষ্টা করবে। রাজধানীর বাইরে থেকেও আসার চেষ্টা করবে। ফলে এদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করাকে আওয়ামী লীগ চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছে। আশা করি এই চ্যালেঞ্জে অতীতের মতোই আওয়ামী লীগ বিজয়ী হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির দাবিটি যেহেতু সংবিধান পরিপন্থি. সে ক্ষেত্রে বিএনপির চেয়ে নীতিগত পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কথা বলার সুযোগ বেশি।’

বুধবারের সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ গত সোমবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে সহযোগী সংগঠনগুলোর সঙ্গে প্রস্তুতি সভা করেছে। সভায় সহযোগী সংগঠনগুলোর শীর্ষ নেতাদের বুধবারের সমাবেশে বেশি করে জমায়েত নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের পরিবর্তে বায়তুল মোকাররমে দক্ষিণ গেটে বিকাল ৩টায় সমাবেশ হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন। আমাদের সময়কে বলেন, মহানগরের সব স্তরের এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর দায়িত্বশীল নেতাদের নিয়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। এখন থেকে সেখানে সময়-সময় নির্দেশনা ও পরামর্শ দেওয়া হবে। তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমাবেশের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার কারওয়ানবাজারের টিসিবি ভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি সভা করেছে। সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল উপস্থিত ছিলেন। তিনি আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বলে জানা গেছে।

অন্য দিকে একদিন আগে থেকেই ছাত্রলীগ রাজপথে নেমেছে। গতকাল সকালে রাজধানীর টিএসসি এলাকার সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘নারী বিদ্বেষী, অসভ্য ও অশ্লীল’ বক্তব্যের প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। ব্যানারে আয়োজক হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী লেখা থাকলেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাই বেশি উপস্থিত ছিলেন।

তবে আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচি বিএনপির সমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এ ব্যাপারে প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, এ সব শান্তি সমাবেশ পূর্বনির্ধারিত। এর সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, শান্তি সমাবেশ সফল করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি নির্বাচন পর্যন্ত চলবে।



IT Amadersomaj