সীতাকুণ্ডে পুঁড়ছে টায়ার রাবার, তৈরি হচ্ছে কালো তেল; ভুগছে এলাকাবাসী

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১ বছর আগে


কাইয়ুম চৌধুরী, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)॥ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জোড়আমতল, বাড়বকুণ্ড দুইস্হানে বাতিল কৃত টায়ার ও বিভিন্ন রাবার পুড়িয়ে কালতেল উৎপাদন করায় কারখানার দূর্গন্ধে এ কালো ধোয়ায় এলাকায় মারাত্বক পরিবেশ দূষন হচ্ছে,রাতে স্হানীয় লোকজন ঘুমাতে পারছেনা অসনীয় গন্ধে। অনেক অভিযোগকেও এর কোন প্রতিকার পাচ্ছেনা স্থানীয়রা।

বাড়বকুণ্ড অনন্তপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রীতি রানী ভারতী সেবায়েত প্রতিনিধি কে জানায়,তাঁর বাড়ীর পূর্বপাশে আবু তাহেরের মালিমকানাধীন জায়গার উপর নির্মিত ” এস এস রূপান্তর ” নামে একটি প্রতিষ্ঠান টায়ার পোড়ানোর ডিপো তৈরী করে রাতের আধারে টায়ার পুড়িয়ে এক প্রকার কালো তেল তৈরি করছে। এই টায়ার পোড়ানোর ধোঁয়ার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ দূষন হয়ে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম সৃষ্টি হয়েছে। তারা প্রশাসনের চোখে ধোকা দিয়ে মধ্যরাতে টায়ার পুড়ার কাজ করে,তখন স্হানীয় লোকজন প্রায় ঘুমিয়ে পড়ে।এই অসনীয় দূর্গন্ধে এলাকার লোজনের স্বাসকষ্ট রোগ বেড়ে যাচ্ছে। কারখানার মালিক ক্ষমতা বিধায় কোন অভিযোগই কাজে আসেনা, প্রতিকার নেই।বরং প্রতিবাদ করলে বিপদ অনিবার্য।

ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা জানান,বাড়বকুণ্ড ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পূর্বে অগ্নিকুন্ড রোডের ভিতরে অনন্তপুর গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে অসাধু এক ব্যবসায়ী অবৈধভাবে কালো তেলের উৎপাদনের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছে।

বিষাক্ত কালো ধোঁয়ার কারণে বেড়ে চলছে, শিশুদের কাশি, অ্যাজমা, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন রোগ বালাই।

স্থানীয়রা আরো জানান,শ্যামা সেন এস এস রূপান্তর নামে একটি প্রতিষ্ঠানের আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের ভিতরে টায়ার পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণ করে আসছেন,পোড়া মবিলের কালো ধোঁয়ায় শিশু ও বৃদ্ধ সহ অনেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।শুধু তাই না এ নাম বিহীন পোড়া কালো তেলের ডিপোর দুর্গন্ধ যুক্ত কালো ধোঁয়ায় যেন মানুষ তথা সকল জীবের কাছ থেকে অক্সিজেন কেড়ে নিচ্ছে। বিষাক্ত এসিড মিশ্রিত কালো তেলে পোড়ানোর ধোঁয়া গুলো বায়ুমণ্ডলকে ধুষনে এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঘনীভূত হচ্ছে। ফলে এলাকায় বিশেষ করে শিশুদের কাশি, এজমা ও হাঁপানি রোগের সূত্রপাত ঘটছে।

স্হানীয় জসিম, সালাউদ্দিন, আইয়ুব আলী, হানিফ সহ অনেকে বলেন, টায়ার পোড়ানোর পোড়া তেলের গন্ধে বাচ্চাদের নিয়ে বসবাস করতে কষ্ট ও অসাধ্য হয়ে পড়ছে। বাচ্চাদের ঘন ঘন অসুখ হচ্ছে।

পরিবেশ অধিপ্তরের অনুমতি আছে কিনা কালো তেল ডিপোর মালিক শ্যামা সেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমতি নিয়ে তারা এ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবি করেন তিনি।

চট্টগ্রা্ম পরিবেশ অধিপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিনের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিনিধি কে বলেন, লাইন্সেস বিহীন অনুমোদনহীন ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া অধৈব কর্মকান্ড চালিয়ে পরিবেশ বিনষ্ট করলে আইনুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে, এই নামের কোন প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ও লাইসেন্স নেই পরিবেশ অধিদপ্তরে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন প্রতিনিধি কে বলেন, অবৈধ এই লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুরুদ্দীন রাশেদ বলেন, কালো তেলে পোড়ার দুগন্ধের কারণে শিশু ও বয়স্কদের ডায়ারিয়া, শ্বাসকষ্ট, কাশি, সর্দি সহ বিভিন্ন রোগ বালাই হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এসব বন্ধ করে দেয়া দরকার।

এদিকে উপজেলার জোড়আমতল সাগরপাড়ের কাছে কয়েকজন অবৈধ ব্যবসাযী টায়ার, রাবার পুড়িয়ে কালো তেল উৎপাদন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে চাঁদাবাজীর মামলা দিয়ে গ্রেফতার করাবে হুমকী দিলে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেনা। ব্যবসায়ীরা সরকার দলীয় বলে স্হানীয়রা আরো বেশী ভয়ে আছে। এসব অবৈধ কারখানা উচ্ছেদ করার জন্য স্হানীয় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের প্রতি জোড় দাবী জানানো হয় ভুক্তভোগীদের পক্ষ হতে।

উল্লেখ্য, বাড়বকুণ্ড চৌধুরী পাড়া আরো একটি কারখানা রয়েছে তবে র র‌্যাবের দু’বার অভিযানে কারখানাটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।



Source link

IT Amadersomaj