ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সাগরে ট্রলার ও জেলে নিখোঁজ, লন্ডভন্ড আমন ধানের ক্ষেত

লেখক: Amadersomaj
প্রকাশ: ১০ মাস আগে


আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতা: ঘুর্ণিঝড় মিধিলির মধ্যে বঙ্গোপসাগরে শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার অবস্থান করছে। এর মধ্যে আমতলী ও তালতলীর বেশ কয়েকটি ট্রলারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এতে অনেক জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান তালতলীর ফকিরহাট মৎস্য সমিতির সহ-সভাপতি ও ইউপি সদস্য ছালাম হাওলাদার। তিনি আরো বলেন, সাগরে অবস্থানরত জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারনে আমন ধান গাছ লন্ডভন্ড হয়ে পরেছে। এতে ধানের ব্যপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা। অপর দিকে ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় চরাঞ্চল ও নিম্নঅঞ্চলের মানুষজনকে সাইক্লোণ সেল্টারে যেতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হলেও কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি বলেন জানান সিপিপির টিম লিডার রিপন মুন্সি।

জানা গেছে, ২২ দিনের ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা গত ২ নভেম্বর শেষ হয়। এরপর উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীর পাঁচ শতাধিক জেলে ট্রলার গভীর সাগরে মাছ শিকারে যায়। ঘুর্ণিঝড় মিধিলির খবর পেয়ে সাগরের নিকটবর্তী জেলে নৌকা ও ট্রলার তীরে ফিরলেও গভীর সমুদ্রে থাকা ট্রলারগুলো তীরে ফিরতে পারেনি। ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে সাগর উত্তাল হয়ে ওঠে। এতে গভীর সাগরে আমতলী ও তালতলীর বেশ কয়েকটি ট্রলারের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান ফকিরহাট মৎস্য সমিতির সহ-সভাপতি ইউপি সদস্য ছালাম হাওলাদার। এতে অনেক জেলে নিখোঁজ রয়েছে। কিন্তু ওই সকল ট্রলারের অবস্থান এখনো জানা যায়নি বলে আরো জানান তিনি। দুইদিন ধরে ঘুর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারনে জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পরেছে। শ্রমজীবি মানুষজন অলস সময় কাটাচ্ছে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন ঘরের বাহিরে বের হচ্ছে না। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল কম করছে। এতে শ্রমজীবি মানুষগুলো অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছে বলে জানান অটো রিক্সা চালক কৃষ্ণ। অপর দিকে বৃষ্টি ও দমকা বাতাসের কারনে আমন ধান গাছ হেলিয়ে পরেছে। ধানের গাছ লন্ডভন্ড হওয়ায় ব্যপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করেছেন কৃষক জিয়া উদ্দিন জুয়েল ও নজরুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে এ প্রতিবেদন লেখা শুক্রবার বিকেল চারটা পর্যন্ত উপকুলীয় অঞ্চল আমতলী ও তালতলীতে বিদ্যুৎ বিছিন্ন রয়েছে বলে জানান রুমা বেগম ও হেমায়েত খাঁন। পায়রা নদী উত্তাল থাকায় শুক্রবার সকাল থেকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল চারটা) আমতলীর পায়রা নদীর ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জানান ফেরির পরিচালক হাসান মিয়া। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা নদীতে ১০ সেন্টিমিটার ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে চরাঞ্চল ও নিম্নঅঞ্চলের তলিয়ে গেছে বলেন জানান গেইজ রিডার আবুল কালাম আজাদ। ঘুর্ণিঝড় মিধিলি উপকুলীয় অঞ্চলে আঘাত হেনেছে বলে জানান আমতলী ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ উপকুলীয় অঞ্চল অতিক্রম করতে পারে বলে তিনি আরো জানান।

আমতলী উপজেলা কৃষিবিদ ঈশা বলেন, বাতাসের কারনে অনেক স্থানে আমন ধানের গাছ হেলিয়ে পরেছে। সবজি ক্ষেতে পানি জমেছে। এতে আমন ধানের গাছ ও সবজি ক্ষেত লন্ডভন্ড হওয়ায় ব্যপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ঘুর্ণিঝড় মিধিলি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চরাঞ্চলে ও নিম্নঅঞ্চলের মানুষজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

IT Amadersomaj